যে মানুষের উপকার স্বীকার করে সে মহান।
মোঃ ফজলুল করিম বাবু, পিতা : মোহাম্মদ কেসমত আলী, মাতা: মোসাম্মৎ ফজিলা বেগম, গ্রাম: দক্ষিণ ছাট গোপালপুর, উপজেলা: ভুরুঙ্গামারি,জেলা: কুড়িগ্রাম। সে ২০২২ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে কৃত্তিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যা বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির সুযোগ লাভ করে। তার পিতা একজন দিনমজুর। দিনমজুরি করে যা পায় তাই দিয়ে সংসার চলে না । আবার সবসময় কাজও পাওয়া যায় না। অনেক স্বচ্ছল আত্মীয় স্বজন থাকা সত্ত্বেও তারা কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ায় নি। বরং তাদের পরামর্শ ছিল ছেলেকে দিনমজুরের কাজে লাগিয়ে দাও।তাতে সংসারের কিছুটা হলেও বোঝা কমবে। কিন্তু পিতা পুত্রের শিক্ষা যাত্রা তাতে থেমে যায় নি। পিতা দিনমজুরি করেই ছেলেকে ভুরুঙ্গামারি থেকে এসএসসি পাস করায় এবং কিছু টাকা জোগাড় করে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে ভর্তি হয়। কিন্তু তার ছিল না বই কেনা কিংবা থাকা খাওয়ার কোনো টাকা । এমতাবস্থায় খরচ যোগানো তার পিতার পক্ষে সম্পূর্ণরুপে অসম্ভব হয়ে পড়ে। প্রয়াত এডভোকেট এনামুল হক চৌধুরী চাঁদ এর ছেলের বড় সন্তান এই ফজলুল করিম বাবুর ক্লাস মেট।তার মাধ্যমে তিনি বিষয়টি জানতে পেরে প্রথমেই একসেট বই কিনে দেন। কিন্তু তিনি দূরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হবার পর এই শিক্ষার্থীর দায়িত্ব নেন তাঁর পুত্র এডভোকেট এরশাদুল হক চৌধুরী শাহিন এবং তাঁর সহধর্মীনী মজিদা আদর্শ ডিগ্রী কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সাবিনা আফরোজ চৌধুরী। তাঁরা তাঁদের নিজ সন্তানের পিছনে যে রকম টাকা পয়সা ব্যয় করতেন তেমনি এই শিক্ষার্থীর পিছনেও তার চাহিদা মাফিক ব্যয় করেছেন। এমনকি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর কোচিং করানোর জন্য আর্থিক সহায়তা সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির ব্যাপারেও সহায়তা করেছেন। ছেলেটি তার ফলাফল জানাতে এসে বলে স্যার আপনিতো সবসময় মাতা-পিতাকে অভিনন্দিত করেন কিন্তু আমার ক্ষেত্রে অভিনন্দন পাওয়ার অধিকারি এডভোকেট শাহিন ও তাঁর স্ত্রী। তাঁরা আমার জন্য নি:স্বার্থভাবে যা করেছে তা আমার জীবনে কোন দিনই পরিশোধ করতে পারবনা। অন্তত: পক্ষে আপনার মাধ্যমে একটা ধন্যবাদ দেয়া গেলে আমি সহ আমার পুরো পরিবার কিছুটা হলেও শান্তি অনুভব করবে।সহকারি অধ্যাপক সাবরিনা আফরোজ চৌধুরীর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান স্যার আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। আমরা কয়েকজনকে সাহায্য করেছি কিন্তু তারা কোন দিনই তা স্বীকার করেনি বা আমরা সেটা প্রত্যাশাও করি নাই। এমনকি একজন চাকুরি পাওয়ার পর বিয়ে করেও আমাদেরকে দাওয়াত দেয় নি বা জানায়নি। আমাদের সে দু:খ নাই। নিজেদের সীমিত আয়ে মানুষকে সাহায্য করেছি বা করব কিন্তু সেজন্য কোনো প্রত্যাশা থেকে করছিনা।আমরা জানি এই ছেলেটিও অন্যদের মতোই স্বীকার করবেনা কিংবা ভুলে যাবে।আজকাল কারও দ্বারা কেউ উপকৃত হলে ছোট হয়ে যাবার ভয়ে কেউই সেটা স্বীকার করতে চায় না।
কিন্তু যেহেতু আপনার কাছে আমাদের এই ক্ষুদ্র অবদানটুকু স্বীকার করেছে সেজন্য আমরা গর্বিত এবং ওর জন্য আমরা প্রাণভরে দোয়া করি। এভাবে সবাই সবার উপকার স্বীকার করেলে মানুষও সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসতে অনুপ্রাণিত হবে এবং সমাজের দূর্বল মানুষগুলোও এগিয়ে যাবার পথ খুজে পাবে।
0 coment rios:
হামার কুড়িগ্রাম নিউজ এ আপনাকে স্বাগতম ।
কোন কিছু বলার বা জানার থাকলে, পেজ এ মেসেজ করুন ধন্যবাদ ।
অথবা +8801301771784